শীত কাল!...
শীতকাল আমাদের বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে অনেকের কাছে প্রচন্ড প্রিয়, আবার কাউরো কাছে অপ্রিয়ও বটে।
তেমনি 'ভাবে আমার কাছে শীতকাল বেশি প্রিয়, তার অন্যতম কারণ অবশ্য শীতকালে মাথার চুল ঘেমে না যাওয়া, হ্যা শুনতে হাসি লাগলেও এটা সত্য। শীতে আমার চুল বেশি ভালো থাকে এবং চুল পড়াও অনেক কমে আসে।তবে তাই বলে শীতের মজার মজার খাবার যে অপ্রিয় তা নয়। শীতে বাংলাদেশীদের ঐতিহ্যবাহি খাবার গুলো অনেক বেশি প্রিয় আমার। তারমধ্যে শীতের পিঠা না খেলে যেন চলেই না।
শীতের পিঠাগুলো মধ্যে চিতোই নামে একটা পিঠা আছে, যা বাংলাদেশে বেশ জনপ্রিয়, আমারও অবশ্য এটা সবথেকে বেশি প্রিয় একটি খাবার।যেটা আমি প্রায় খেয়ে থাকি। শহর অঞ্চলের রাস্তার ধারে, অনেক ছোট ছোট ফুড কার্ট দোকান দেখতে পাওয়া যায়, যাদের প্রধান কাজ চিতোই পিঠা তৈরি করা। আমার শহরেও এমন দোকান অনেক আছে, আমিও সেখান থেকে পিঠা খেতে অনেক পছন্দ করি। তারা জায়গা বসে মাটির চুলায় গরম গরম পিঠা তৈরি করে, বিক্রয় করে। যার যতগুলো পিঠা খেতে পছন্দ সে চায়লে তত খেতে পারে। সেখানে কেবল পিঠা পাওয়া যায় না, পিঠার সাথে থাকে বিভিন্ন রকমের ভর্তা যেমন, শুটকি মাছ ভর্তা, কালোজিরা ভর্তা, ধরিয়া পাতা, সরিষা বাটা, এছাড়াও ঝাল ভর্তা সহ বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন রকমের ভর্তার আয়োজন করে থাকে। সে ভর্তা দিয়ে পিঠা খাওয়ার যেন এক আলাদা মজা।
কখনও কখনও ডিম দিয়ে চিতোই পিঠা তৈরি করতে দেখা যায়। কেউ আবার ডিম সাথে চিতোই পিঠা খেতে ভালোবাসে, তাদের জন্য এই ডিম - পিঠা আয়োজন। আমার অবশ্য ডিম সাথে পিঠা খাওয়ার তেমন কোন শখ হয় নি, তাই খেয়েও দেখা হয় নি। কেননা চোখের সামনে চিতোই পিঠা আর ভর্তা দেখলে, সে লোভ সামলিয়ে আমার পহ্মে ডিম পিঠা খাওয়া সম্ভব নয়।আমি যতটুকু পারি পিঠা সাথে ভর্তা দিয়ে খেতে ভালোবাসি।
চিতোই পিঠা কেবল মাত্র ভর্তা দিয়ে খাওয়াতে সীমাবদ্ধ নয়। দেশে জনপ্রিয় আরেকটি খাবার পুলি পিঠা, সেটিও এই চিতোই পিঠা দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে।সাধারণ খেজুরের রস সাথে দুধ দিয়ে, তা কোন পাত্রে জ্বাল দিয়ে, তার ভিতর চিতোই পিঠা দিয়ে, সারা রাত ভিজিয়ে রেখে তৈরী করা হয়, এই সুস্বাদু পুলি পিঠা। যা বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় একটি পিঠা। এই পিঠা মিষ্টি'র মত কাজ করে, আমাদের দেশে। কোন অনুষ্ঠানে বা আত্নীয় বাড়ি'তে বেড়াতে গেলে সঙ্গে করে অনেকে এই পিঠা নিয়ে যেতে দেখা যায়। এছাড়াও বাড়িতে সকলে একসাথে পুলি পিঠা তৈরী করে, মজা করে খেতে দেখা যায়।
বাংলাদেশে কেবল এই দুই পিঠাতে সীমাবদ্ধ নয়, এর সাথে রয়েছে আরও বাহারি ধরনের মজার মজার পিঠা। যা দেশের সর্বস্তরে সব সময় কম-বেশিি পাওয়া যায়। আর এই সকল বেশিরভাগ পিঠা তৈরী হয়ে দুধ, চিনি, নারকেল, গুড় ও পাটালি মিশ্রিত করে। যার ফলে পিঠা গুলো মিষ্ট স্বাদের হয়ে থাকে। ছোট বাচ্চা থেকে বুড়া,নবীন - প্রবীন সকলে প্রচুর পছন্দের খাবারে পরিণত হয়েছে শীতকালীন পিঠা।
পিঠা কেবল বাড়িতে বানিয়ে বা দোকানে বিক্রয় সীমাবদ্ধ নয়, বাংলাদেশে পিঠা জন্য হয় পিঠা উতসব , যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন, স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি সাথে সরকারী - বেসরকারি সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই এই পিঠা উতসব দেখা যায়। যেখানে দেশের সব ধরনের মজার মজার সুস্বাদু পিঠা নিয়ে, পিঠা স্টল দেওয়া হয়। আর এতে প্রতিযোগিতা ও হয়ে থাকে এবং বিজয়ীদেরকে পুরষ্কার দেওয়া হয়।
আর শীতের এই দিনে পিঠা কে কেন্দ্র করে গ্রামের বাড়ি গুলোতে আলাদা এক আমেজ উঠে আসে। যা আশে - পাশের বাড়িতে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
শীতের দিনে কেবল পিঠা উতসবে আনন্দ থেমে থাকে না,সকলে মেতে ওঠে বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাবার আনন্দে। ভ্রমণ প্রেমীরা, বেরিয়ে পড়ে তার নতুন অভিজ্ঞতার আশায়।আর মনের আনন্দে উড়ে বেড়াই।